
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উত্তর ম্যানচেস্টারের হিটন পার্ক শুল সিনাগগে ইয়োম কিপুরের বিশেষ প্রার্থনার সময় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভোর থেকেই উপাসকরা জমায়েত হচ্ছিলেন, আর সকাল ৯টা ৩১ মিনিটে প্রার্থনা চলাকালেই ছুরি হাতে হামলাকারী ঢুকে পড়েন। মুহূর্তেই রক্তাক্ত হয়ে ওঠে উপাসনালয় প্রাঙ্গণ।
সিনাগগের গেটে একটি কালো গাড়ি ধাক্কা মারার পর সন্দেহভাজন হামলাকারী ছুরি নিয়ে উপস্থিতদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রবীণ এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং আরও অনেকে গুরুতর আহত হন। হামলাকারী জানালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে উপাসকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করে দরজা আটকে দেন। ছয় মিনিটের মধ্যে সশস্ত্র পুলিশ গুলি চালিয়ে তাকে নিস্তেজ করে। তবে কোমরে বাঁধা সন্দেহজনক বস্তু দেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল তিনটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটায়।
গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটেই সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা ঘোষণা করে ‘অপারেশন প্ল্যাটো’ চালু করে। অতিরিক্ত বাহিনী ও হেলিকপ্টার মোতায়েন হয়, সব সিনাগগ ও হাসপাতাল লকডাউন করা হয়।
এই ঘটনায় দুজন নিহত ও অন্তত চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপাসকদের সাহস না থাকলে হামলাকারী সিনাগগের ভেতরে ঢুকে আরও বড় ধরনের হত্যাযজ্ঞ ঘটাতে পারত।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম জিহাদ আল-শামী (৩৫), সিরীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এ ঘটনায় আরও কয়েকজনকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, গাজা সংঘাতের পর থেকে এলাকায় ইহুদিবিরোধী ঘৃণা বেড়েছে। এর আগে দেয়ালে অপমানজনক লেখা ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে। সমাজকর্মীদের মতে, এই হামলা কেবল ইহুদি সম্প্রদায়ের নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য এক সতর্কবার্তা।
উপাসনালয়ের বাইরে হতবাক দাঁড়িয়ে থাকা প্রবীণ ফ্রান ব্যারি বললেন, “সভ্য সমাজে এর কোনো স্থান নেই। এটা শুধু দুঃখ ও ভয় বাড়াচ্ছে।” অন্যরা বলছেন, ঘৃণা নয়, বরং সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই এখন সময়ের দাবি।