
মোঃ মোসলেম উদ্দিন সিরাজী,সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গোহালা নদী ইজারা বিতর্ক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও একই উপজেলার মুক্ত জলাশয় হিসেবে পরিচিত ধলাই বিল ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে বিলের মাঝখানে লাল নিশান টাঙিয়ে মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এতে জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মৎস্য জীবিরা। স্থানীয় সূত্র জানায়, উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের আগদিঘল গ্রামে চলনবিল এলাকায় প্রায় ১৬০ একর বিস্তৃত এই ধলাই বিলে প্রচুর দেশীয় প্রজাতের মাছ পাওয়া যায়। উন্মুক্ত জলাশয় হিসেবে এখানে স্থানীয় মৎস্য জীবিরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু আগদিঘল গ্রামের জামে মসজিদের নামে ২ লাখ টাকায় বিলটি ইজারা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রামের আব্দুল ইউনুস সরকার, সাইদুল সরদার, রহমান সরকার, আব্দুল ওহাব সরকার ও রববান সরকারসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বিলটি ইজারা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা। ভুক্তভোগী জেলেরা বলেন, আশ্বিন মাসের শুরুতেই বিলের চারপাশে লাল পতাকা ঢাড়িয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এমনকি স্থানীয় ভাবে মাইকিং করে জনসাধারণকে মাছ না ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরই একইভাবে মসজিদ কমিটির নামে সিন্ডিকেট করে বিলের মাছ বিক্রি করে আসছে একটি মহল। সংবাদ প্রকাশের পর গোহালা নদীর ইজারা বাতিল করা হয়। আগদিঘল গ্রামের রব্বান সরকার বলেন, গ্রামের সবার সিদ্ধান্তে বিল ইজারা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা মসজিদ, মাদ্রাসা ও কবরস্থানের উন্নায়নে ব্যয় করা হবে। এটি মুক্ত জলাশয় হলেও সরকারি জমি নয়, তাই ইজারা দিতে কোনো সমস্যা নেই। তবে উধুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহবায়ক নাসির উদ্দীন এই দাবির বিরোধিতা করে বলেন, কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে বিল ইজারা দিয়েছে। লাল পতাকা টাঙিয়ে মৎস্য জীবীদের মাছ ধরতে দিচ্ছে না। এতে সাধারণ জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইজারার টাকা মসজিদে জমা দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দরকার। ইজারা দেওয়া হলো নদীর আড়াই কিলোমিটার এলাকা। এ বিষয়ে উল্লাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন আক্তার রিনা বলেন, মুক্ত জলাশয় ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেউ মাছ ধরতে বাধা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্তে সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।