
ডেস্ক রিপোর্ট
ওয়াশিংটন, ১২ ফেব্রুয়ারি: যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করা সকলের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকারকে রদ করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ সোমবার তৃতীয় ফেডারেল বিচারপতি স্থগিত করেছেন।
গত সপ্তাহে সিয়াটল ও মেরিল্যান্ডের বিচারপতিদের একই রকম রায়ের পর নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিসট্রিক্ট বিচারপতি জোসেফ এন ল্যাপলান্ট এই রায় দেন। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (ACLU) দায়ের করা এক মামলায় দাবি করা হয়, ট্রাম্পের আদেশ সংবিধান লঙ্ঘন করছে এবং “আমেরিকার সংবিধানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মূল্যবোধকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি ও আপিল
ট্রাম্প প্রশাসন জোর দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন, এমন বাবা-মার সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রের “এখতিয়ারের অধীন” নয়, তাই তারা নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী নয়। তবে, সিয়াটলের বিচারপতি ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বাধা দেওয়ার পর প্রশাসন আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী ও আইনি প্রেক্ষাপট
এই মামলাগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী, যা ১৮৬৮ সালে গৃহযুদ্ধের পর অনুমোদিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক ড্রেড স্কট মামলার পর এই সংশোধনী আসে, যেখানে দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করা হলেও স্কট নামের এক ক্রীতদাসকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি।
১৮৯৮ সালে ‘যুক্তরাষ্ট্র বনাম ওং কিম আর্ক’ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে, কূটনীতিকদের সন্তান, যুদ্ধকালীন শত্রুদের সন্তান, বিদেশি জাহাজে জন্ম নেওয়া শিশু ও স্বতন্ত্র নেটিভ আমেরিকান জনজাতির সন্তানদের ক্ষেত্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রযোজ্য নয়। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মাটিতে জন্ম নেওয়া অন্যান্য শিশুদের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করা হয়।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৩০টি দেশের অন্যতম, যেখানে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব (মাটির স্বত্বের নীতি বা “মাটির অধিকার”) প্রযোজ্য।