
ডেস্ক রিপোর্ট
আগামী ১৬-১৭ ফেব্রুয়ারিতে ওমানের মাস্কটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অষ্টম ইন্ডিয়ান ওশান সম্মেলন (আইওসি ২০২৫) যেখানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নিজ নিজ প্রতিনিধিদল পরিচালনার পাশাপাশি সাইডলাইনে একান্ত আলোচনা করবেন। এতে, শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণ ও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও খারাপ না হওয়ার বার্তা দিল্লিকে প্রেরণ করার লক্ষ্য রয়েছে।
গত জানুয়ারিতে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ভারতের পক্ষ থেকে তৌহিদ হোসেনকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকে, এই সম্মেলনে উভয় নেতার নেতৃত্বে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দল উপস্থিত থাকবে। সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত হওয়া একান্ত আলোচনায়, দুই দেশের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও আন্তঃরাজনৈতিক বিষয়ে মতবিনিময় করবেন।
সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, এই বৈঠকে তৌহিদ হোসেন ও জয়শঙ্কর নিজেদের দেশের স্বার্থ রক্ষা ও পরস্পরের সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব ঠেকানোর ব্যাপারে মতবিনিময় করবেন। গত ২০২৪ সালের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে বাংলাদেশের ও ভারতের পারস্পরিক স্বার্থসংক্রান্ত বিষয় এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছিল। এরপর, গত ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকও সম্পন্ন হয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, যেখানে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে পূর্বে শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশকে ভারতে মেনে নিতে কষ্ট হয়েছিল, এখন বাস্তবতা এভাবে দাঁড়িয়ে আছে যে, ভারতের কিছু আচরণ – সীমান্তে অযাচিত উত্তেজনা সৃষ্টি, কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা ও ভাঙচুর, অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা ও মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার – নিয়ে ঢাকার অসন্তোষ বিদ্যমান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপকে মোটেই ভালোভাবে দেখার সুযোগ নেই। এগুলো বন্ধ করতে আহ্বান জানাবে ঢাকা। পাশাপাশি ভারতে আশ্রয় দেওয়া পলাতক অপরাধীরা যাতে সেখানে বসে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না করে তারও আহ্বান জানানো হবে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে, মাস্কট বৈঠকে উভয় পক্ষই চরম অস্বস্তিকর বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা ও তা দ্রুত নিরসনের উপায় খোঁজার প্রত্যাশা প্রকাশ করেছে। এভাবেই দুই দেশের দায়িত্বশীল নেতৃত্ব, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য আন্তঃপ্রশাসনিক ও কূটনৈতিক চর্চা অব্যাহত রাখার সংকল্প নিয়েছে।