
নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাকারী, পতিত স্বৈরাচারের দোসর, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ এইচ হলের সাবেক সহসভাপতি মশিউর রহমান সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন। আদালতের নির্দেশে তিনি বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে।
এই মশিউরকে ছাড়াতে আন্দোলনে নেমেছেন বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) বিজ্ঞানী-কর্মচারীরা। এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তারা ব্যাপক বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেছেন এবং প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন।
ছাত্রসমাজের প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় ছাত্রসমাজ বিক্ষুব্ধ ও মর্মাহত হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। রাজধানীর নিউমার্কেট থানার ওসি মো. মোহসীন উদ্দিন ও নিউমার্কেট জোনের উপপুলিশ কমিশনার (এসি) তারিক লতিফের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ মুছে না যেতেই, পতিত স্বৈরাচারের একজন দোসরের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করায় বিআরআইসিএমের বিজ্ঞানী-কর্মচারীদের এই ধৃষ্টতায় সংশ্লিষ্ট সকলে বিস্মিত হয়েছেন। জানা যায়, এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী মো. মনিরুজ্জামান। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন মো. আবু হাসান, মেহেদি হাসান টুটুল, জাবেদ বিন আহমেদ, ওমর বিন হামজা, রাইসুল ইসলাম, মইনুল হুদা, তোহিদুল ইসলাম ও মুহিব প্রমুখ।
অনেকের ধারণা, এ ধরনের কর্মকাণ্ড পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হতে পারে। কেপিআইভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীরা সিসিটিভি ক্যামেরা টেপ মেরে বন্ধ রেখে এবং গুরুত্বপূর্ণ ক্যামেরাগুলো সরিয়ে ফেলে সন্দেহজনক কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গবেষণাগারে থাকা দাহ্য ও বিশেষ কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা করা হচ্ছে কিনা, তা অনুসন্ধান করা জরুরি বলে এলাকাবাসীর আশঙ্কা।
অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংকট
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু কর্মচারী জানিয়েছেন, ভবনের মূল গেট তালা দিয়ে সবাইকে নিচে বসিয়ে রাখা হয় এবং শুধুমাত্র চার-পাঁচজন ওপরে যাতায়াত করেন। দরজা বন্ধ রেখে তারা কী কাজ করেন, সেটি অজানা। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নাশকতার কোনো পরিকল্পনা জড়িত কিনা, তা তদন্ত করা এখন সময়ের দাবি।
দাবির প্রেক্ষাপট
এ বিষয়ে স্মারকলিপি প্রদানকারীদের পক্ষে ঢাকা কলেজের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও শিক্ষার্থী সাহিন মৃধা বলেন, “একজন ছাত্রলীগের পদধারী, একাধিক মামলার আসামিকে ছাড়াতে বিআরআইসিএমের আওয়ামী লীগের দোসররা মানববন্ধন করছে। আমরা অবিলম্বে তাদের চাকরিচ্যুতি ও গ্রেপ্তার চাই।”