
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে প্রস্তাবিত দ্বিগুণের বেশি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাস্তবায়িত হলে শিল্প খাতের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।
আজ রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ ও ইকোনমিক রিপোর্টারস ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক সেমিনারে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। ব্যাংক খাতের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই দেওলিয়া হয়েছে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ালে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারাবেন। এমনকি বিদ্যমান বিনিয়োগও সম্প্রসারিত হবে না। সার্বিকভাবে দেশে শিল্প খাত ধ্বংসের মুখে পড়বে।”
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “সিস্টেম লস কমানো এবং শুল্ক ও কর হ্রাসের মাধ্যমে গ্যাসের দাম কমানোর সুযোগ রয়েছে। এই বিকল্পগুলো বিবেচনা না করে যদি সরাসরি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তাহলে দেশে শিল্প খাতের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, “গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে দেশের আমদানি নির্ভরতা বাড়বে এবং এতে অর্থনীতির ওপর চাপে পড়বে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এখনকার চ্যালেঞ্জিং সময়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে উৎপাদন খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে কমে যাবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা। নতুন বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে সিমেন্ট, ইস্পাত ও সিরামিক খাতে আমদানি নির্ভরতা আরও বাড়বে, যা আর্থিক খাতের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।”
মাসরুর রিয়াজ আরও সতর্ক করে বলেন, “গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা দেশের মন্দ ঋণের পরিমাণও বাড়িয়ে দেবে।”
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা গ্যাসের প্রস্তাবিত মূল্যবৃদ্ধির বিরোধিতা করে সরকারের কাছে যৌক্তিক নীতিনির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে দেশের শিল্প খাত চরম সঙ্কটে পড়বে এবং অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।