
নিজস্ব প্রতিবেদক
শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সমর্থক সন্দেহে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ-র্যাবসহ যৌথবাহিনী। “অপারেশন ডেভিল হান্ট” নামে এই অভিযানের বিস্তারিত জানিয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী জাবের সাদেক বলেন, “শুক্রবার রাতের সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।”
গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণখানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও প্রতীক ধ্বংসের চেষ্টাকারী একদল জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৪ জন আহত হন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাসভবনেও হামলা চালানো হয়। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উচ্চপর্যায়ের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দেশব্যাপী অভিযান তীব্র করে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে কঠোর পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় গাজীপুরে পরিচালিত হয় “অপারেশন ডেভিল হান্ট”।
পুলিশ সুপার জাবের সাদেকের মতে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, সম্পত্তি ধ্বংস ও সামাজিক অবরোধসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা দায়ের করা হবে। তিনি সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সতর্ক অবস্থান অব্যাহত রাখার কথাও জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবারের সহিংসতার পর গাজীপুরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল, যা এখন আংশিক নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে প্রশাসনিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
এই অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃত্ব এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নির্বিশেষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।”
প্রসঙ্গত, গাজীপুরে সাম্প্রতিক সহিংসতা ও এর পরবর্তী অভিযান রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তাপ সৃষ্টি করেছে, যা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।