
নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনা কেন্দ্র থেকে মনিটরিং করেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন সংগঠনটির কুয়েট শাখার আহ্বায়ক ওমর ফারুক। আজ (বুধবার) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের ক্রীড়া কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির এই অভিযোগ করেন।
নাছির উদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশে যত বড় বড় অগ্নিকাণ্ড হয়েছে, তার উৎস ছিল ছোট ছোট শর্ট সার্কিট। গতকাল সেই কাজ শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশৃঙ্খল মব। নেতৃত্ব দিয়েছে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক ওমর ফারুক। কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করেছে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।”
তিনি আরও বলেন, “হাসনাত আব্দুল্লাহ বিভিন্ন সভা-সেমিনারে মানুষকে জ্ঞান দিয়ে থাকেন, বিভিন্ন ওয়াজ-নসিহত করেন। কিন্তু আমরা প্রশ্ন করতে চাই, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর যে মিটিং হয়েছে, সেখানে কোন প্রটোকলে তিনি এবং নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী গিয়েছেন।”
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বাংলাদেশের যেকোনো সংগঠনের রাজনীতি করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। তবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কীভাবে ছাত্রদলের তিনজন নেতার ওপর হামলা করে— সে প্রশ্ন আমরা রাখতে চাই। শিবিরের কাছে আমরা জানতে চাই, কুয়েটে তাঁদের কমিটি আছে কি না, এবং গতকাল যে হামলা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। যদি কোনো ক্যাম্পাসে বিনা কারণে হামলা ঘটে, তাহলে তার দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “৫ আগস্টের পরাজিত শক্তি এবং ওই সময় যারা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগী ছিল, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও প্রকাশ্যে গণতান্ত্রিক চর্চায় বাধাগ্রস্ত করছে। মব সংস্কৃতির মাধ্যমে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি করছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই সকল ঘটনার ধারাবাহিকতায় কুয়েটের সাম্প্রতিক ঘটনায় অনলাইনে ও অফলাইনে সত্য ঘটনাকে আড়াল করে অপপ্রচারের মাধ্যমে ছাত্রদলের নামে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মো. ইয়াহিয়ার নেতৃত্বে একটি সরেজমিন তদন্ত টিম খুলনায় গেছে। তাঁদের প্রতিবেদন ও পুলিশি বা প্রশাসনিক তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগ পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকেই উপসংহার টানা সম্ভব নয়।”
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বয়ান, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, ছবি ও ভিডিও প্রমাণ অনুযায়ী, ঘটনার সূত্রপাত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি মিছিল থেকে ছাত্রদল সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে। সেই মিছিল থেকেই ধারণকৃত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যখন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে মিছিলটির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুয়েট কমিটির আহ্বায়ক মো. ওমর ফারুকের উস্কানিতে মিছিলকারীরা তাদের দিকে অতর্কিতভাবে তেড়ে গিয়ে হামলার সূচনা করে।”
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।